উপকূলীয় পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষায় প্যারাবনের ভূমিকা

উবিনীগ || Monday 23 September 2019

স্থানীয়ভাবে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবন বা প্যারাবন নামে পরিচিত এবং এই বনভূমি বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। এই ম্যানগ্রোভ এলাকা জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে অভ্যন্তরীণ ভূমি ও জনপদকে রক্ষা করে। পৃথিবীর এই বৃহত্তম গভীর বনভূমি বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিম এলাকায় (প্রধানত খুলনা জেলা) অবস্থিত।

বাংলাদেশের উপকূলে ৫৮,৭০০ হেক্টর প্রাকৃতিক ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল রয়েছে এবং ১০০০ হেক্টর মানুষ কর্তৃক সৃষ্ট ম্যানগ্রোভ এলাকা। এটি শুধু দেশের প্রধান বৃহত্তর বনভূমি নয়, এটি পৃথিবীর বৃহত্তর একক ঘন বনাঞ্চল। সুন্দরবন এলাকা একটি জোয়ার-ভাটা সমৃদ্ধ বনাঞ্চল। এই এলাকায় উত্তর পূর্বের মিঠে পানি এবং দক্ষিণ-পশ্চিমের লবণাক্ত পানির মিশ্রন ঘটে। ম্যানগ্রোভ এলাকায় বৃহত্তম গাছপালা ২০ মিটার দীর্ঘ, কিন্তু প্রধান বনাঞ্চলের গাছপালা ১০ মিটার পর্যন্ত।

চকরিয়া সুন্দরবন

কক্সবাজার জেলার মাতামুহুরী ডেল্টায় চকরিয়া সুন্দরবন ম্যানগ্রুভ বনাঞ্চল অবস্থিত। এর আয়তন প্রায় ৮৫৪০ হেক্টর এলাকা জুড়ে কিন্তু বর্তমানে এই বনে কোন গাছ নেই। চিংড়ি চাষের কারনে সব গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এছাড়া অন্য ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল (১৮০০ হেক্টর) সরু হয়ে নাফ নদী এবং অফসোর দ্বীপের সাথে সংযুক্ত হয়েছে। গবেষণা প্রতিবেদন থেকে যতদূর জানা যায় ১৯০৩ সালে চকরিয়া সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। প্রাথনিক ভাবে সুন্দরবনের আয়তন ছিল ৪৫ হাজার ৫০০ একর। পরবর্তীতে সরকার সুন্দরবনের বেশ কিছু জায়গা কৃষি জমি হিসেবে বন্দোবস্তি দেয়ায় চকরিয়া সুন্দরবনের আয়তন ২১০০০ একরে পরিণত হয় এর মধ্যে ১৮৭২৫ একর বনকে সংরক্ষিত বন এবং বাকী বনকে প্রোটেকটেড বন হিসেবে রাখা হয়। জোয়ারের সময় সুন্দরবন এলাকা পানিতে ডুবে যায় আবার ভাটার টানে শুকিয়ে যায়। পৃথিবীর বৃহত্তম খুলনা সুন্দরবনের সাথে এর মৌলিক কোন পার্থক্য নেই। চকরিয়া সুন্দরবনের ইতিহাস চকরিয়াবাসী তথা উপকূলীয় মানুষের কাছে এখনও কিংবদন্তি হয়ে আছে।

চিংড়ি চাষের নামে চকরিয়া সুন্দরবন নিধন

সত্তরের দশকে আন্তর্জাতিক বাজারে চিংড়ি মাছের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকার মনোনিবেশ করে। সেই লক্ষ্যে ১৯৭৭ সালের দিকে সরকার চকরিয়া সুন্দরবনের রামপুর এলাকায় ৫ হাজার একর জমি চিংড়ি চাষের নিমিত্তে স্বল্প মেয়াদী ইজারা দেয়। সরকার ৫ হাজার একর বন এলাকা বৃহৎ আয়তন ৩০ টি প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের বড় বড় সামরিক আমলা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পুঁজিপতি, বেসামরিক আমলা ও রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে লালিত সুবিধাভোগী লোকজনের মধ্যে বন্টন করে দেয়। এই সময় একর প্রতি খাজনার পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় নাম মাত্র মূল্যে।

যাদেরকে চিংড়ি প্রকল্প বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল তাদের শতকরা ৯৯ জনেরই মৎস্য/চিংড়ি চাষ সর্ম্পকে অভিজ্ঞতা ছিল না। তাদের অধিকাংশই এ সব চিংড়ি প্রকল্পগুলো স্থানীয় মৎস্যজীবিদের কাছে একর প্রতি ৪/৫ হাজার টাকা মূল্যে একসনা সাবলীজ দিয়ে অগ্রিম টাকা নিয়ে যেতো। তাছাড়া স্থানীয় যেসব প্রকল্প মালিক নিজেরা চিংড়ি চাষ করতো তাদের কেউ বৈজ্ঞানিক অথবা আধা-নিবিড় পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করতো না। ফলে উৎপাদন খরচও ছিল কম। তখনকার সময়ে সমুদ্রের পানিতে বা প্রাকৃতিক উৎস থেকে প্রচুর চিংড়ি পোনা থাকায় একটা ১০০ একর প্লটে উৎপাদন খরচ মিটিয়ে বার্ষিক ৮/১০ লাক্ষ টাকা আয় করতে সক্ষম হয়েছে। এসব কারনে চিংড়ি প্রকল্পের মালিকরা রাতারাতি বিপুল অর্থবিত্তের অধিকারীতে পরিণত হয়।

১৯৮৬ সালে এরশাদ সরকারের আমলে সুন্দরবনের রামপুর এলাকার বৃহৎ আয়তন প্রকল্পের ইজারা বাতিল করে দিয়ে তা জেলা কোটার ভিত্তিতে ১০ একর বিশিষ্ট প্লটের মাধ্যমে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ সব প্লটগুলোও সমাজের এলিট শ্রেণী এবং বিত্তবানদের হাতে চলে যায়। চকরিয়া উপকূলীয় এলাকার সধারন মানুষ, জেলে, ভূমিহীন, বিত্তহীন শ্রেণীদের ভাগ্যে একটি প্লটও জোটে নাই। রামপুর এলাকার জমি বরাদ্দ দেওয়ার পর পরবর্তীতে সরকার পর্যায়ক্রমে সুন্দরবনের অধিকাংশ জায়গা ১০ একর, ২০ একর, ৩০ একর বিশিষ্ট প্লটের মাধ্যমে বরাদ্দ দিয়েছেন। এই সব প্লটগুলো প্রশাসনের সহায়তায় এক শ্রেণীর মধ্যস্বত্ত্বভোগী সুবিধাভোগী লোকজনের মালিকানায় চলে যায়। উল্লেখ্য ১৯৭৫ সাল থেকে শুরু করে ১৯৮৭ সালের মধ্যেই গোটা ২১ হাজার একর বন কেটে উজার করা হয়।

২১ হাজার একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সম্পদ ও প্রাণবৈচিত্র্যের অফুরন্ত ভান্ডার চকরিয়ার সুন্দরবন আজ সম্পূর্ণরুপে বিলুপ্ত। গোটা বনভূমি আজ বিরাণ ভূমিতে পরিণত হয়েছে চারদিকে ধূ ধূ হাহাকার। চিংড়ি নামক তথাকথিত শ্বেতস্বর্ণ উৎপাদনের নামে গোটা বনকে পরিকল্পিত উপায়ে নির্মমভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। চকরিয়া সুন্দরবন কেন্দ্রিক জীবিকা নির্বাহকারী জেলে, ভাওয়ালী, মাওয়ালী, মহিষচাষী ও ভূমিহীন, বিত্তহীন সাধারন গরীব মানুষ যারা এই বনকে কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহ করতো তারা এখন নিরবে কাঁদে।

১৯৯১ সালের সাইক্লোন

বাংলাদেশে প্রতি বছরই প্রাকৃতিক দূর্যোগ ঘটে থাকে। উপকূলীয় এলাকায প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় এবং মৌসুমী নিম্নচাপ ও ভারী বর্ষণের ফলে বন্যার আশংকা থাকে। প্যারাবন নিধন, অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মান, চিংড়ি ঘের তৈরী, পাহাড় কাটা ও নির্বিচারে মৎস্য আহরণ ইত্যাদি কারনে উপকূল এলাকায় প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়ছে। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় ও জ্বলোচ্ছ্বাসে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু, ঘর-বাড়ি, হাঁস-মুরগী, গরু-ছাগল, প্রয়োজনীয় মালামাল, পুকুর, কৃষিজমিসহ জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি সাধিত হয়। সেই ঘূর্ণিঝড়ে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১৫-২০ ফুট উচু পানিতে প্লাবিত হয়। প্যারাবন না থাকায় বাতাস এবং জ্বলোচ্ছ্বাসে জন-জীবনে আঘাত আনে।

এই ক্ষয়-ক্ষতির জন্য স্থানীয় লোকজন প্যারাবন না থাকাকেই এর মূল কারন হিসেবে মনে করেন। প্যারাবন কেটে চিংড়ি চাষ করে বিদেশে রপ্তানি করে কিছু মানুষ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হলেও চকরিয়া সুন্দরবন বিলুপ্ত হওয়ার পর দেশের কী যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে তা বলার অপেক্ষা রাখছে না। ১৯৯১ সালের সাইক্লোনে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে চিংড়ি চাষ এর ১০ ভাগের ১ ভাগ পূরণ করতে পারে নাই।

উবিনীগ কর্তৃক প্যারাবন সৃজন

১৯২৮ সালের পূর্বে বদরখালী এবং আশ-পাশ এলাকা প্রায় ৫০০০ একর গভীর ম্যানগ্রোভ বন ছিল। বৃট্রিশ সরকার ১৯২৯ সালে ভূমিহীনদের নিয়ে বদরখালী সমবায় কৃষি উপনিবেশ সমিতি গঠন করে এবং ৪০০০ একর গভীর ম্যানগ্রোভ বন কেটে সমিতির সভ্যদের পুনর্বাসন করেন। তারপর থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ ৭০ বছরের কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ম্যানগ্রোভ বনায়নের কথা চিন্ত করেনি।

উবিনীগ নয়াকৃষি আন্দোলন ১৯৯১ সনের প্রলয়ংকারী ঘূর্নিঝড়ের পর বদরখালী ইউনিয়নে স্থানীয় সরকার, বদরখালী সমবায় কৃষি উপনিবেশ সমিতি ও স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় ১৯৯২ সালের মাঝামাঝি সময়ে বদরখালী এলাকার পশ্চিমে মহেশখালী চ্যানেলের পূর্ব প্রান্তে ৭ কি: মি এলাকায় কেওড়া (Sonneratia apetala) ও বাইন (Avcennia officinalis) প্রজাতির ম্যানগ্রোভ বনায়ন করে।

পরবর্তী সময়ে ১৯৯৭ সালের বদরখালী ইউনিয়নের সর্ব দক্ষিণ প্রান্তে মাতামুহুরী নদীর উত্তর দিকে উবিনীগ কেন্দ্রের সামনে প্রায় ৫০ একর জায়গায় চারা রোপন করে। (যদিও এগুলো আর অবশিষ্ট নেই) পুরো এলাকায় বনায়নের পর সার্বক্ষণিক পাহারা দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। এর মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করে রোপনকৃত চারাগুলো বড় গাছে রূপান্তরিত হয়।

উবিনীগ কর্তৃক ১ম ও ২য় ধাপে যথাক্রমে ১৯৯২ সনে ৭ কি: মি: চর এবং ১৯৯৭ সনে প্রায় ৫০ একর জায়গায় ম্যানগ্রোভ বনায়ন করার পর গত ১৭ বছরে নতুন করে বিভিন্ন সময়ে জেগে উঠা চরে নতুন করে রিংবাধ দিয়ে বদরখালী সমিতি উক্ত জায়গা দখল করে চিংড়ি ঘের নির্মান করে। ফলে ১৯৯২ সনে রোপনকৃত ৭ কি: মি: জায়গায় গাছের শতকরা ৪০ ভাগ গাছ কেটে ফেলা হয় এবং ১৯৯৭ সালের রোপন করা প্রায় ৫০ একর জায়গায় পুরো বনটাই নিধন করা হয়। রিংবাধের উপরিভাগে চিংড়ি ঘের নির্মিত হওয়ায় প্রতিনিয়ত জোয়ার ভাটায় পানি ঘেরে ঢোকানো এবং বের করার জন্য স্লুইচ গেট তৈরী করা হয়। ভাটার সময় সুইচ গেটের মাধ্যমে পানি নেমে আসার কারণে অনেক জায়াগায় বড় বড় গর্ত ও নালার সৃষ্টি হয়। ফলে সে জায়গাগুলোতে গাছ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। সমিতি কর্তৃক রিংবাধ নির্মান করার পরেও বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় উবিনীগ কর্তৃক চারা রোপনের কাজ অব্যাহত ছিল।

অপর দিকে গত ১৫/১৬ বছরের ব্যবধানে চরের গঠন পরিবর্তন হয় এবং নতুন করে চর জেগে উঠায় বনায়নের সম্ভবনা তৈরী হয়। তারই প্রেক্ষিতে জেগে উঠা চরে ২০০৯-২০১২ সাল পর্যন্ত আরো ৫ কিলোমিটার এলাকায় ২ লক্ষ কেওড়া ও বাইন প্রজাতির চারা রোপন করা হয়।

২০১১-২০১২ সালে উবিনীগ মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নে মহেশখালী চ্যানেলের পশ্চিম প্রান্তে অর্থাৎ জেএম ঘাট থেকে দক্ষিণ দিকে হিন্দু পাড়া পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকায় বাইন ও কেওড়া প্রজাতির চারা রোপন করে। বর্তমানে চারাগুলো ৮-১০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৯৯২ সাল থেকে রোপন করা গাছ এখন বড় বড় বৃক্ষরাজিতে পরিণত হয়েছে।

ম্যানগ্রোভ বনায়নের সুফল

উবিনীগ কর্তৃক চকরিয়ার বদরখালী এবং মহেষখালীর শাপলাপুর ইউনিয়নে প্রায় ১০ কি: মি: বনায়নের কারণে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ঐ জনপদ রক্ষা পেয়ে আসছে। প্রতি বছরই ছোট বড় জলোচ্ছ্বাস বা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি বেশী বৃদ্ধি পেলে ২/৪ ফুট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয় এবং বেড়ী বাঁধ ভেঙ্গে যায়। কিন্তু যেখানে এ বন রয়েছে সেখানে বেড়ী বাঁধ, ঘরবাড়ী সহজেই ক্ষতি হয় না।

ম্যানগ্রোভ বনায়নের কারণে সুফল/পরিবর্তনগুলো নিম্নরূপ:

  • কওড়া বাইন প্রজাতি রোপন করার পর অন্যান্য ম্যানগ্রোভ প্রজাতির ঝোপ গুল্ম, লতা আপনিতেই জম্মাচ্ছে যেমন: বিকাটা, কাঞ্চলতা, হারবা গাছ, উড়ি ঘাস, কালি লতা ইত্যাদি।
  • বনায়নের ফলে গাছের গোড়ায় যে শ্বাসমূল (Arial Root) রয়েছে সেগুলো মাছের চারণভূমি এবং ডিম ছাড়ার জন্য ভাল জায়গা।
  • বনায়নের কারণে গাছ থেকে পাতা ও বীজ ঝড়ে গিয়ে আপনাতেই আরও গাছ-পালা নিচে জম্মাছে, পচা পাতা ও কেওড়া গাছের বীজ মাছের খাদ্যের যোগান দিচ্ছে।
  • প্যারাবনে কালি বক, ধলি বক, টিয়া, ঘুঘু, চুড়–ই, বাবুই. ডাহক চামচ ঠুটা, পানকৌড়ি প্রজাতির বিভিন্ন পাখি আসছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় ঝাঁকে ঝাঁকে আরও নানা প্রজাতির পাখি এসে গাছে বসে এদের কিচির মিচির শব্দ অন্যান্য বন্য প্রাণীদের আকৃষ্ট করে।
  • প্যারাবনে যে ভাবে ঘন হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে হারিয়ে যাওয়া বন্য প্রাণী ফিরে আসবে। ২/১ জায়গায় উদ বিড়াল দেখা গেছে। যেখানে মাছ বেশী থাকে সেখানে উদ বিড়াল দেখা যায়।
  • বড় গাছ থেকে পড়ে যাওয়া ডালপালা ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা জ্বালানী হিসেবে ব্যবহারের জন্য সংগ্রহ করছে।
  • জেলেরা জোয়ারের সময় চরে জাল ব্যবহার করে নানা প্রজাতির মাছ ধরেছে যেমন: টেংরা, বাটা, দাতিলা, কাউন মাছ ইত্যাদি।
  • প্যারাবনের নিচে বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণ সম্পদ যেমন: শামুক, কাঁকড়া, পেরকী, ডোম মাছ, বেনডা, চেউয়া ইত্যাদি দেখা যাচ্ছ।
  • প্যারাবনে সৃজনের কারণে গরীব মানুষ ও জেলেদের জীবন জীবিকার শর্ত তৈরী হয়েছে।
  • সর্বোপরি এলাকার প্রকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

বর্তমানে নানা কর্মশালা, সভা, সেমিনারে পরিবেশ রক্ষার জোর দাবি জানিয়ে আসছে পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। আজ সকলের সমন্বিত দাবি, প্রাকৃতিকভাবে সৃজিত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল নির্বিচারে যেভাবে নিধন করা হয়েছে তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে উপকূলীয় এলাকায় সৃজন করতে হবে প্যারাবন। রক্ষা করতে হবে আগামী প্রজন্মকে। উপকূলীয় এলাকায় পরিবেশের ভারসাম্য প্রাণবৈচিত্র্য তথা জনজীবন রক্ষার জন্য প্যারাবনের বিকল্প নেই।




Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *