ড. এম. এ. সোবহান ও গোলাম রাব্বী বাদল || Tuesday 01 December 2015
আধুনিক কৃষির বিষাক্ত ছোবলে উৎপাদন ব্যবস্থা ধ্বংসের দারপ্রান্তে পৌছেছে। রাসায়নিক কৃষি প্রসারের ধারায় সিনথেটিক সার ও বালাই নাশকের ব্যাপক ব্যবহারের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর যেমন-বিষাক্ত হচ্ছে তেমনই এককাট্টা ফসলের আবাদের ফলেও প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে। ধ্বংসাত্মক এ ব্যবস্থা অবিরাম ধারায় চলতে থাকলে কৃষি ব্যবস্থায় ধস নামবে। মাটির গুণাগুণ হারিয়ে যাবে। নিস্প্রাণ শিলায় পরিণত হবে। যেমনটি সৃষ্টির আদিতে গাছপালা ও প্রাণীর আবির্ভাবের পূর্বে ছিল।
আধুনিক কৃষি ব্যবস্থায় উৎপাদন খরচ ক্রমশঃ বেড়েই চলছে। অথচ রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসাবে কৃষি তথা ভোগ্য পণ্যের বাজার দর কমানোর জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে। ফলে যা হবার তাই হচ্ছে। একদিকে উপকরণের দাম বেড়েই চলছে অন্য দিকে কৃষি পণ্যের দাম কমছে। ফসল বিক্রি করে উৎপাদন খরচ উঠছে না। ক্রমাগত ভাবে উৎপাদনে লোকসান দিয়ে কৃষক ঋণগ্রস্থ হচ্ছেন। হাল, গরু, ভিটে, মাটি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করে শূণ্যহাতে পরিবার, পরিজন নিয়ে জীবিকার সন্ধানে অজানার পথে পাড়ি দিচ্ছেন। এ সত্য বহু পূর্বেই প্রমাণিত হয়েছে যে কর্পোরেট কৃষি জনগণের চাহিদা ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যার্থ। এর বিকল্প ব্যবস্থা যে নেই তা নয়। তবে সে পথে রয়েছে অনেক বাধা। সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে রাজনৈতিক সমর্থন পুষ্ট কর্পোরেট ব্যবসা বাণিজ্য ও কায়েমী স্বার্থবাদী বহুজাতিক কোম্পানি। বহুজাতিক কোম্পানির অনৈতিক ব্যবসা বাণিজ্য প্রসারের জন্য সদা ব্যস্ত রয়েছেন কিছু চৌকশ উপস্থাপক এবং তাদের চ্যানেল টিভি। কোম্পানির সরাসরি বিজ্ঞাপনের চেয়ে এ সব মতলব-বাজ উপস্থাপনা বহুগুণ বেশী ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে। সাধারণ মানুষের চিন্তা চেতনার ক্ষেত্রে ভ্রান্তির বীজ বপন করে। ধার করে নেয়া অনেক ভাল কথার ফাঁকে ফাঁকে তাদের আসল মতলবের বীজটি সুকৌশলে বপন করেন। যেহেতু এ সব ব্যক্তিরা প্রভাবশালী প্রচার মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত তাই অনেক রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যক্তিরাও এদের যথেষ্ঠ তাজিম করেন। ক্যামেরার সামনে চেহারা দেখাতে পেরে ধন্য হন। এই ফাঁকে উপস্থাপক মহোদয় তার প্রিয় কোম্পানির এজেন্ডা বাস্তবায়নে জনমত সৃষ্টি করেন। আমরা কেউ কি কখনও ভেবে দেখেছি-এ সব প্রচারের অর্থ কে দেয়? মেঘে মেঘে অনেক বেলা হয়েছে। এখন ভেবে দেখার সময় হয়েছে।
তবে প্রশ্ন হচ্ছে ক্ষুদ্র কৃষক রাসায়নিক সার ও বালাই নাশক ছাড়া প্রাণবৈচিত্র্য নির্ভর কৃষি করে বাড়তি জন সংখ্যার খাদ্য সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে পারবেন কি?
এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহের আলোকে কিউবার উদাহরণ তুলে ধরা যেতে পারে।
কিউবা দক্ষিণ আমেরিকার ক্যারিবিও অঞ্চলের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। অবস্থান ২০Ñ২৩ক্ক উত্তর অক্ষাংশ এবং ৭৪-৮৫ক্ক পশ্চিম দ্রাঘিমাংশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য থেকে প্রায় ৯০ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত। আয়তন: ৪২, ৮০০ বর্গমাইল। জনসংখ্যা: ১, ১২, ০০০০০। প্রতি বর্গমাইলে জনসংখ্যা ২৬১ জন।
কিউবার সাম্প্রতিক ঘটনা প্রবাহ প্রমাণ করে যে ক্ষুদ্র কৃষকরা প্রাণবৈচিত্র্য নির্ভর কৃষি ব্যবস্থা অনুসরণ করে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম। সাম্প্রতিক দুটি ঘটনা যেমন- ১৯৫৯ সালের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব এবং ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়া কিউবার ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য বাঁক। একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ আর অন্যদিকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও তার মিত্রদের সাথে উন্নয়ন সহায়ক বাণিজ্যিক সুবিধা।
অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় কিউবা অতি দ্রুত আধুনিকতার পথে এগিয়ে যায়। আশির দশকে দক্ষিণ আমেরিকা ও ক্যারিবিও অঞ্চলের মধ্যে শিল্প উন্নয়ন এবং কৃষি যান্ত্রিকায়নের ক্ষেত্রে কিউবা সকলের সামনে এগিয়ে যায়।
রফতানী নির্ভর এককাট্টা ফসলের আবাদ সম্প্রসারিত হয়। বস্তুত পক্ষে কিউবা বাহ্যিক সাহায্য নির্ভর উন্নয়নে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। আমদানী করা হাইব্রিড বীজ, কৃষি যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক সার, বালাই নাশক ও জ্বালানীসহ যাবতীয় উপকরণ বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। আশির দশকের শেষ দিকে জাতীয় গড় উৎপাদন, পুষ্টি, গড় আয়ু, কম শিশু মৃত্যুহার, স্বাস্থ্য সেবা, আবাসন, মাধ্যমিক শিক্ষা, বিনোদন মূলক অনুষ্ঠানে জনগনের অংশ গ্রহণ প্রভৃতি সূচকে কিউবা ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিও অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ স্থানে পৌছে যায়। কিউবার এ লক্ষণীয় অগ্রগতির মূলে ছিল রাষ্ট্রিয় দক্ষতা, সামাজিক ন্যায় বিচার ও জনগণের দেশ প্রেম।
দেশটিতে ১৯৮৯ সালে খাদ্য উৎপাদনের জন্য যে জমি বরাদ্দ করা হয়েছিল তার তিনগুণ বেশী জমিতে রফতানী নির্ভর চিনি শিল্পের জন্য আখের আবাদ করা হয়েছিল। বিদেশ থেকে আমদানী করে খাদ্য শস্যের চাহিদা পূরণ করা হয়। খাদ্য শস্য চাহিদার অর্ধেকের বেশী আমদানীর মাধ্যমে পূরণ করা হয়।
সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের আগেও ব্যক্তি পর্যায় কৃষকরা দেশের সার্বিক উৎপাদনের একটি ক্ষুদ্র অংশের ভাগিদার ছিল। রফতানী মুখী উৎপাদন ব্যবস্থাই ছিল দেশের মূল কর্মকান্ড। বিপ্লবের পরে এ ব্যবস্থা আরো শক্ত ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৮০ সালের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় দেশের ৬৯% মানুষ শহরে বাস করে। দেশের ৮০% জমি যৌথ খামার ব্যবস্থায় আবাদ হয় এবং ২০% জমি ক্ষুদ্র কৃষকদের আবাদ ছিল। যদিও এ ২০% জমির মালিকরাই দেশের মোট খাদ্য চাহিদার ৪০% সরবরাহ করতেন। এককাট্টা ফসলের যান্ত্রিক চাষাবাদই ছিল কিউবার বিপ্লবের প্রধান দূর্বলতা।
কিউবার খাদ্য ঘাটতি জনিত দূর্যোগের সূত্রপাত ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার সময় থেকেই। হঠাৎ করে জ্বালানী আমদানী ৫৩% কমে যায়। গমসহ অন্যান্য খাদ্য শস্যের আমদানীও ৫০% কমে যায়। রাসায়নিক সারের সরবরাহ ৮০% কমে যায়। প্রায় আকাশ থেকে পড়ে যাবার অবস্থা। কৃষি উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক উপকরণ নাই। জ্বালানি নাই। সেচের ব্যবস্থা নেই। খাদ্য আমদানী বন্ধ।
১৯৮০ দশকের তুলনায় ১৯৯০ দশকের প্রথম দিকে মাথা পিছু খাদ্যের প্রাপ্যতা ৩০% কমে যায়। তবে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়া এবং পরিবর্তিত পরিস্থিতির জন্য কিউবা একেবারে অপ্রস্তুত ছিল না। মানব সম্পদ উন্নয়নে কিউবা আগে থেকেই সচেতন ছিল। আপদ কালীন পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত একদল বিজ্ঞানী ও গবেষক এগিয়ে এলেন। স্মরণযোগ্য বিষয় ল্যাটিন আমেরিকার মোট জনসংখ্যার মাত্র ২% কিউবায় বাস করলেও বৈজ্ঞানিকের সংখ্যার হিসাবে ১১% কিউবার নাগরিক। দেশের ক্রান্তি লগ্নে বিজ্ঞানীরা তাদের মেধা ও নিষ্ঠা দ্বারা প্রাপ্ত সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন।
কিউবার সরকার রাসায়নিক কৃষি থেকে বেড়িয়ে এসে জৈবকৃষি বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করে। হঠাৎ করে রাসায়নিক উপকরণের সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় বিকল্প হিসাবে স্থানীয় ভাবে প্রাপ্ত জৈব উপকরণ যেমন জৈব বালাইনাশক, পোকামাকড় দমনের প্রাকৃতিক ব্যবস্থা, রোগ-পোকা প্রতিরোধী জাত বাছাই, শস্য পর্যায় এবং আগাছা দমনের জন্য সাথী ফসলের আবাদ প্রচলন করেন। ট্রাক্টর এবং যান্ত্রিক টিলার এর পরিবর্তে কাঠের লাঙ্গলের চাষ প্রবর্তন করেন। কারণ কাঠের লাঙ্গলে জ্বালানী, খুচরা যন্ত্রাংশ ও টায়ারের প্রয়োজন হয় না।
হঠাৎ করে ১৯৮৯-৯০ সালের ফসলের মৌসুমে আধুনিক কৃষি থেকে জৈবকৃষিতে প্রত্যাবর্তনের ফলে সারা দেশে উৎপাদন লক্ষনীয় ভাবে কমে যায়। প্রথম সমস্যা হলো ট্রাক্টর ছাড়া চাষ। রাসায়নিক সার ছাড়া ফসল উৎপাদন। আস্তে আস্তে গবাদী পশুর সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলো। কাঠের লাঙ্গল দ্বারা ট্রাক্টরের শূন্যস্থান পূরণ করা হলো। জৈব সার ও জৈব বালাই নাশকের উৎপাদন বৃদ্ধি করা হয়। কেঁচোসার ও সবুজসার উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়। আসলে আধুনিক কৃষি থেকে জৈব কৃষিতে রূপান্তরে ক্ষুদ্র কৃষকদের খুব বেশী সমস্যায় পড়তে হয়নি। কারণ আজকের জৈব কৃষকরা মূলতঃ ঐতিহ্যগত ক্ষুদ্র কৃষকদের বংশধর। বংশানুক্রমে তারা স্বল্প উপ-করণ নির্ভর জৈব কৃষি চর্চা করে আসছিলেন। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পরে ষাটের দশক থেকে সোভিয়েত রাশিয়ার সহায়তায় আধুনিক কৃষিতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। আবার নব্বই এর দশকে সোভিয়েত সহায়তা বন্ধ হলে আবার তারা নতুন ভাবে জৈবকৃষি চর্চা শুরু করেন।
তবে সমস্যা হয় সরকারী ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত খামারগুলিতে। মোট আবাদী জমির ৬৩% ছিলো সরকারী ব্যবস্থাপনায়। সরকারী খামারগুলিকে সমবায়ের মাধ্যমে ব্যবস্থাপনার জন্য কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়। ১৯৯৩ সালের মধ্যে সরকারী ব্যবস্থাপনার ৮০% জমি কৃষকদের ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেয়া হয়।
১৯৯৫ সালের মাঝামাঝিতেই কিউবার খাদ্য ঘাটতির সমস্যা সমাধান হয়। ১৯৯৬-৯৭ সালের ফসলী মৌসুমে কিউবার ১৩টি মৌলিক খাদ্য দ্রব্যের মধ্যে ১০টিতে রেকর্ড পরিমাণ ফলন অর্জিত হয়। প্রাথমিক ভাবে এ সাফল্য অর্জিত হয় ক্ষুদ্র কৃষকদের মাধ্যমে বিশেষ করে ডিম, শুকর এবং শাকসবজির ক্ষেত্রে শহর ভিত্তিক কৃষিতেও লক্ষনীয় সাফল্য অর্জিত হয়। ইতিপূর্বে শহর এলাকায় যে সকল পতিত জমি ছিল এখন তা ফলমূল, শাক সবজিসহ অন্যান্য ফসল এবং পোষা প্রাণী লালন পালনে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমাদের পরিকল্পনাবিদ, উন্নয়ন সহযোগী এবং দাতাগোষ্ঠী জোড় গলায় বলছেন বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশ প্রাণবৈচিত্র্য নির্ভর কৃষির মাধ্যমে জনগণের খাদ্য চাহিদা পূরণ করতে পারবে না। ঘাটতি পূরনের জন্য অবশ্যই আমদানী করতে হবে। সে ক্ষেত্রে কিউবার উদাহরণ আমাদের সামনে একটি উজ্জল দৃষ্টান্ত। রাসায়নিক কৃষি বর্জন করে প্রাণবৈচিত্র্য নির্ভর কৃষির মাধ্যমে খাদ্যে সার্বভৌমত্ব অর্জন সম্ভব। কিউবার উদাহরণ থেকে আমরা আরো দেখতে পাই যে ক্ষুদ্র কৃষকরা বড় খামারীদের চাইতে অনেক বেশী দক্ষ। আমরা আরো শুনতে পাই যে খাদ্য ঘাটতি পূরণের জন্য আন্তর্জাতিক খাদ্য সাহায্যের কোন বিকল্প নাই। তবে কিউবার ক্ষেত্রে এ ধারনা অনর্থক প্রমানিত হয়েছে।
কিউবার অভিজ্ঞতা থেকে প্রমানিত হয় যে প্রাণবৈচিত্র্য নির্ভর কৃষির মাধ্যমে খাদ্য সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব। বাংলাদেশের নয়াকৃষি আন্দোলনের কৃষকরাও একইভাবে প্রাণবৈচিত্র্য নির্ভর কৃষি প্রচলনের জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ গবেষণা চালিয়ে আসছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় তিন লক্ষের অধিক কৃষি পরিবার এ আন্দোলনের সাথে যুক্ত আছেন। নয়কৃষির গবেষণায় কৃষকরা প্রমাণ করেছেন যে নয়াকৃষির (প্রাণবৈচিত্র্য নিভৃর কৃরিু) মাধ্যমে নিরাপদ খাদ্য ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব অর্জন করা সম্ভব।
সর্বগ্রাসী রাসায়নিক আগ্রাশনের ছোবল থেকে মুক্তি পেতে হলে নয়াকৃষি আন্দোলনের কৃষকদের পরীক্ষা নিরীক্ষায় অর্জিত ফলাফল বাংলাদেশের সকল কৃষকের মাঝে বিস্তারের আশু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নয়াকৃষির দশনীতি কৃষক পর্যায়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। যার উল্লেখযোগ্য নীতিগুলি হচ্ছেঃ-
১। বিষ ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
২। কৃষকের হাতে বীজ রাখতে হবে।
৩। রাসায়নিক সার ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
৪। মিশ্র ফসলের চাষ করতে হবে।
৫। অনাবাদি ফসলের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
৬। মাটির তলার পানি দ্বারা সেচ দেয়া চলবেনা।
৭। শুধু শস্য নয় – খড়, পাতা খড়ি, মাছ, মুরগি, পশু-পাখি, জীব, অণুজীবসহ সব কিছুর ব্যবহার ও সংরক্ষণ করতে হবে।
৮। গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ সব গৃহপালিত পশু-পাখি লালন-পালনে মনোযোগী হতে হবে
৯। জলজ প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও বিকাশের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং
১০। প্রাকৃতিক সম্পদ বৃদ্ধি করে জীবিকার নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে। একই সাথে বিপননের ক্ষেত্রে কৃষকদের উৎপাদিত পন্যের লাভজনক বাজার মূল্য নিশ্চিত করতে হবে।
তথ্য সূত্রঃ
১। উবিনীগ, ২০০৯, নয়াকৃষি আন্দোলন।
২। রাসেট, পি. এস. ২০০৪. নিউইয়র্ক মান্থলি, রিভিউ প্রেস।
৩। রসুল জি এবং গোপাল বি. থাপা, ২০০৩ সাসটাইনা বিলিটি অব ইকোলজিক্যাল এন্ড কনভেনশনাল এগ্রিকালচারাল সিসটেম্স ইন বাংলাদেশ, এলশেলভিয়র- এগ্রিকালচারাল সিসটেম্স ৭৯ (২০০৪) ৩২৯-৫১।
৪। কিকো ওশিনো. ১৯৯৬. হিস্ট্রিক্যাল ডেভলোপমেন্ট, প্রেসেন্ট সিস্যুয়েশান এন্ড প্রোসপেক্টস অব অরগানিক ফার্মিং: এক্সাম্পল ফ্রম জাপান এন্ড বাংলাদেশ।
সিনিয়ার গবেষক, উবিনীগ