উবিনীগ || Sunday 08 November 2015
বাংলাদেশের মতো উর্বর ও প্রাণবৈচিত্র্য সমৃদ্ধ একটি দেশে নির্দয়ভাবে জিএমও ফসল উৎপাদনের জন্যে বিদেশী কোম্পানিগুলো চেষ্টা করে যাচ্ছে কারণ একে একে বিভিন্ন দেশ তাদের মাটি এই জিএমও ফসলের জন্যে ব্যবহার করতে দেবে না। বিশ্ব এখন সে দিকেই যাচ্ছে। বাংলাদেশ যখন দ্রুত কৃষিতে একের পর এক জিএমও ফসলের প্রবর্তনের জন্য তাড়াহুড়ো করছে সে সময় ভারত বলছে তারা এ ব্যাপারে ভেবে চিনতে করবে, কোন তাড়া নেই। তারা বলছে জনগণের মধ্যে জিএমও ফসল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কাজেই বাণিজ্যিকভাবে চাষের অনুমোদন দেয়ার আগে ৮ থেকে ১০ বছর মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সফলতা যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে [The Economic Times, 10 June, 2015]। স্কটল্যান্ড সরকার ইওরোপিয়ান ইউনিয়নের জিএম ভুট্টা ও ছয়টি জিএমও ফসলের অনুমোদনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। স্কটল্যান্ডের ভোক্তারা জানতে চান বিদেশ থেকে আসা মাংস, ডিম, দুধে যেন লেবেল দেয়া থাকে যে গরু বা মুরগীকে জিএমও খাদ্য খাওয়ানো হয়েছে কিনা। স্কটল্যান্ড সরকার মনে করে জিএমও প্রবর্তনের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে না, বরং জিএমও ফসলের মাধ্যমে খাদ্য ব্যবস্থা বড় কোম্পানির নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। অথচ স্কটল্যান্ডে ছোট কৃষক এবং কমিউনিটি উদ্যোগের মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহ হচ্ছে, যার সম্ভাবনা অনেক বেশী। http://www.thecourier.co.uk/news/scotland/gm-crops-set-to-be-banned-in-scotland-1.893824
এএফপি-এর খবরে বলা হয়েছে যে ২৮টি ইওরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশের মধ্যে ১৯টি দেশ তাদের দেশে জিএমও ফসল উৎপাদন করবে না বলে ২০১৫ সালের অক্টোবরের ৩ তারিখে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে অস্ট্রিয়া, নেদারন্যাল্ড, পোল্যান্ড, ইতালী, হাঙ্গেরী, গ্রীস, বুলগেরিয়া সহ ১৯টি দেশ রয়েছে। ডেনমার্ক, লুক্সেম্বার্গ, স্লোাভেনিয়া ও মাল্টা পরে আবেদন করেছে যে তারাও জিএমও ফসল উৎপাদন থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। বেলজিয়ামও তার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এদিকে বৃটেনে ওয়েলস এবং উত্তর আয়ারল্যান্ডও নিষেধাজ্ঞা জারী করছে। https://uk.news.yahoo.com/most-eu-nations-seek-bar-gm-crops-145652899.html#0IuTxZs
ব্রাজিল জিএমও ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রথম সারিতে আছে। জিএমও সয়াবিন বিশেষ করে এখানেই হয়। Brazilian Association of Collective Health (Abrasco) এর গবেষণায় দেখা গেছে ২০০০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত কীটনাশকের ব্যবহার ১৬২% বেড়েছে। এবং এই বৃদ্ধি সরাসরি জিএমও ফসলের চাষের সাথে জড়িত। জিএমও সয়াবিন প্রবর্তনের সময় বলা হয়েছিল এগ্রোকেমিকালের ব্যবহার কমে যাবে কারণ জিএমও সয়াবিনের প্লেগ হবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় তার সম্পূর্ণ উল্টো ঘটনা ঘটছে। শুধু পরিমাণে বেশী নয়, আরো বেশী শক্তিশালী ও কার্যকর কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। এমনকি কিছু কীটনাশক জরুরীভাবে আমদানি করতে হয় যা এর আগে ব্রাজিলে অনুমোদিত ছিল না। ব্রাজিলে জিএমও ফসলে ব্যবহার করা এগ্রোকেমিকেলের ৫০টি উপাদানের মধ্যে ২২টি অন্যান্য দেশে নিষিদ্ধ রয়েছে। তারা বলছে এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। http://news.agropages.com/News/NewsDetail—14870.htm
অথচ কীটনাশক ব্যবহার কমাবার যুক্তি দিয়ে বাংলাদেশে প্রথমে বিটিবেগুন, পুষ্টির কথা বলে গোল্ডেন রাইসসহ বিভিন্ন জিএমও ফসল একের পর এক প্রবর্তন করা হচ্ছে। কারণ জিএমও ফসল প্রবর্তনকারী কোম্পানির কিছু দেশ এমন লাগবে যেখানে জিএমও ফসলের ক্ষতির কথা গ্রাহ্য করা হবে না, তারা অনায়াসে সরকারের সাহায্যে শুরু করে প্রাইভেট সেক্টরের মাধ্যমে চালিয়ে নিতে পারবে। বাংলাদেশে সেই সুযোগ আছে মনে করেই এই কাজ করা হচ্ছে।
বিটিবেগুনের ব্যর্থ দুই বছর
জিএমও বা বিটিবেগুন ২০১৩ সালে তড়িঘড়ি অনুমোদন নিয়ে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসের ২২ তারিখ থেকে মাঠ পর্যায়ে চাষের মাধ্যমে প্রবর্তন করে বাংলাদেশ জিএমও খাদ্য ফসল উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে বিশ্বের আরও ২৮টি দেশের কাতারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বিটিবেগুন এশিয়ার অন্য দুটি দেশে, যেমন ভারত ও ফিলিপাইনে স্বাস্থ্যগত ও পরিবেশগত দিকগুলো নিশ্চিত না হওয়ার কারণে চাষের অনুমতি পায় নি। বাংলাদেশের পরিবেশবাদী ও কৃষক সংগঠনও এর বিরোধিতা করেছে। কিন্তু এসব কিছুই অগ্রাহ্য করে মনসান্তো ও মাহিকোর পরিকল্পনা মাফিক প্রথম পর্বে ২০ জন কৃষকের মাঠে চাষ করা হয়। প্রথম পর্যায়ে পরিবেশ সংগঠন এবং সাংবাদিকদের নিজস্ব অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে ব্যর্থতার কথাই ধরা পড়েছে। কৃষকের লাভ হয়নি, কৃষক ভাল করে জানেও না এই বেগুনের বিশেষ মাহাত্ম কি? যারা চারা দিয়েছে তারা এই বেগুনে পোকা লাগবে না বলেছে এই যা। কিন্তু কৃষক দেখছে ফলে পোকা না লাগলেও গাছে, পাতায় পোকা লেগেছে। কৃষি কর্মকর্তা তাদের বিষ ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছে। ঠিক মতো ফলন হয় নি, বেগুন গাছেই পচে গিয়েছে। দেখতে বিদঘুটে লাগছে। বাজারে নিয়ে বেশীক্ষণ রাখলে চিমসে গেছে। ফলে ক্রেতারা আগ্রহী হয় নি। কৃষক বিটিবেগুন নাম বলতে পারে বটে কিন্তু এটা যে জেনেটিকালী মডিফাইড (জিএমও) ফসল এবং এর সম্ভাব্য ক্ষতি কি হতে পারে কিছুই জানে না। প্রথম পর্বের ২০ জনের মধ্যে ১৬ জন কৃষক ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবীও জানিয়েছিল। এই ব্যর্থতা মনসান্তো, মাহিকো এবং বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বারি) দেখেও তাদের পরবর্তী পরিকল্পনা থেমে থাকে নি। আর অনুমোদনের শর্ত ভঙ্গ করেই বিটিবেগুন বাজারে বিক্রির জন্যে দিতে গিয়ে তারা লেবেল লাগাচ্ছে না। জনগণ জানে না, তারা যে বেগুন খেয়েছে বা খাচ্ছে তার মধ্যে বিটিবেগুন কোনটি!
বিটিবেগুন দ্বিতীয় পর্বে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বারি) গত বছর নভেম্বর (২০১৪) মাসে ১৭টি জেলার ১০৬ জন কৃষক বাছাই করে চারা বিতরণ করার পরিকল্পনা করে। চাষ শুরু করার পরে পত্র-পত্রিকায় এই বেগুনের বিফলতার কথা জানা যায়। এই প্রেক্ষিতে উবিনীগ ও নয়াকৃষি আন্দোলনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত অনুসন্ধানমূলক গবেষণা চালিয়েছে গত ২৭শে সেপ্টেম্বর থেকে ৯ অক্টোবর, ২০১৫ পর্যন্ত। সেখানে বারি থেকে দেয়া তালিকাভুক্ত ১৯টি জেলার ১১০ জন কৃষকের মধ্যে মোট ৭৯ জন কৃষকের মাঠে সরেজমিন তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী কৃষককে ১০ শতাংশ জমি থেকে শুরু করে ৩০ শতাংশ জমিতে চারটি বিটিবেগুনের চারা দেয়া হয়েছে। এই সময় মাঠে বিটিবেগুনের কোন গাছ ছিল না, মার্চ-এপ্রিল মাসের মধ্যেই ফসল তোলার কাজ শেষ হয়ে গেছে।
উনিশটি জেলায় মোট জমির পরিমাণ বারির হিসাবে ২৫ একর। নয়াকৃষি ও উবিনীগের গবেষণায় ৭৯ জন কৃষকের ১৮.০২ একর জমিতে বিটি বেগুন চাষ হয়েছে বলে জানা গেছে, যদিও হিসাব অনুযায়ী ১৮.৪১ একর জমিতে চাষ হবার কথা ছিল। প্রায় ০.৪০ শতাংশ জমি চাষ হয় নি। চারটি বিটিবেগুনের ‘জাত’; বিটিবেগুন ১ (উত্তরা), বিটিবেগুন ২ (কাজলা), বিটিবেগুন ৩ (নয়নতারা) এবং বিটিবেগুন ৪ (ঈশ্বরদী -০০৬) বিতরণ করা হয়েছে। তবে বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই বিটিবেগুন ২ এবং ৩ দেয়া হয়েছে। আমাদের গবেষণায় ৭৯ জনের মধ্যে ১১টি জেলার ৪৫ জন কৃষক বিটিবেগুন ২ এবং ৩ পেয়েছেন, ৭টি জেলার ২৬ জন কৃষক পেয়েছেন বিটিবেগুন ১ এবং ৬টি জেলার ৩৭জন কৃষক পেয়েছেন বিটিবেগুন ৪। প্রতি কৃষককেই দুটি বিটিবেগুনের জাত এবং জমির চারপাশে লাগাবার জন্যে সাধারণ জাতের বেগুন দেয়া হয়েছে। এই জাতগুলো হচ্ছে, ঈশ্বরদী-০০৬, উত্তরা, নয়নতারা, কাজলা, ভোলানাথ, ঝুমকা ইত্যাদি। একটি লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, যে এলাকায় যে বেগুন সাধারণভাবে চাষ হয় এবং কৃষকরা পরিচিত সেই এলাকায় সেই জাতের বিটিবেগুন বা সাধারণ জাত দেয়া হয়নি। যেমন যশোরের কৃষক চাগা বেগুন করে, তাদের কাছে কাজলা বেগুন অপরিচিত লেগেছে এবং চাষ করে আনন্দ পায়নি। অর্থাৎ বেগুনের জাতের সাথে বিশেষ এলাকার কৃষকদের যে একটা সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও একেবারে আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে সে দিকটা কোন বিবেচনায় রাখা হয়নি। বিটিবেগুন জিএমও বেগুন এটাই কৃষকরা জানে না, বিজ্ঞানীরা একে প্রযুক্তি হিসেবে বিবেচনা করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মতো বেগুনের আদি বৈচিত্র্যের দেশে কৃষক এই চাপিয়ে দেয়া প্রযুক্তি মেনে নেবে কেন?
বিটিবেগুনের চারা সরবরাহ করেছেন ১৩টি জেলায় বারি এবং ১০টি জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। যে সব জেলায় বারির আঞ্চলিক গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে সেখানে বারি সরবরাহ করেছে আর বাকী জেলায় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ নিজেই দিয়েছে এবং সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব নিয়েছে। পাঁচটি জেলায় বারি এবং কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ উভয়েই দিয়েছে। চারা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের ১ থেকে ৪ দিনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে কাছাকাছি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে। রোপনের জন্যে অক্টোবর, নভেম্বরের মধ্যে চারা দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে প্রথম বিতরণ করা চারা মারা গেলে আবার দেয়া হয়েছে ডিসেম্বর, জানুয়ারি মাসেও।
প্রথম পর্বের মাঠ চাষে কৃষকদের টাকা দিয়ে দেয়া হয়েছিল নিজেরাই সার-কীটনাশক কেনার জন্যে। দ্বিতীয় পর্বে এসে সে ভরসা তারা পায় নি। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও বারির গবেষকরা নিজেরাই গিয়ে সব কিছু দিয়ে এসেছে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে তারা কৃষকের মাঠ ব্যবহার করেছে মাত্র, বিটিবেগুন কৃষক তৈরি করতে পারে নি। কৃষকদের প্রথমে বলা হয়নি এটা বিটিবেগুন। চারা বড় হবার পর সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে কৃষি কর্মকর্তা। কৃষক কোন তথ্য দেয়ার বেলায় খুব সতর্ক ছিল। অনেক ক্ষেত্রে তারা তথ্য দেয়ার আগে কোন এক কর্মকর্তার সাথে ফোনে কথা বলে নিয়েছেন। তবে কৃষকরা বর্ণনা করেছেন তাদের মাঠে কত বিজ্ঞানী এসেছেন। সে বিজ্ঞানী ঢাকা থেকে শুধু দেশী নয়, বিদেশী বিজ্ঞানী এসেছেন ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, সুডান থেকে। এরা এসেছেন মাঠ দিবস পালন উপলক্ষ্যে। বিটিবেগুনের জন্য মাঠ দিবস করা হয়েছে এই চাষকে জনপ্রিয় করার জন্য।
বিটিবেগুনে সার ব্যবহার হয়েছে প্রচুর। গোবর, খৈল থেকে শুরু করে MoP, TSP, DAP, Urea, Zinc, Gypsum, Boron, Oil cake, Magnesium এমনকি কোথাও Hormone দিতেও দেখা গেছে। এই সব সার দেয়ার মধ্যে কোন প্রকার নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে দেয়া হয়নি। বিটিবেগুন সংক্রান্ত যে পুস্তিকাটি কৃষকদের জন্যে করা হয়েছে সেখানে শুধু গোবর, ইউরিয়া, টিএসপি ও MoP দেয়ার পরামর্শ আছে। অর্থাৎ কিছু সার অপ্রয়োজনীয়ভাবেও দেয়া হচ্ছে।
বিটিবেগুন ডগা ও ফল ছিদ্রকারি পোকাবিহীন বলেই এই বেগুন প্রবর্তন করা হয়েছে যে প্রায় ৭০% বেগুন এই পোকা লাগার কারণে নষ্ট হয় এবং এই কারণে বেগুনে অনেক কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। দাবী করা হয়েছে বিটিবেগুন কীটনাশকবিহীন একটি বেগুন, অতএব নিরাপদ। তবে বিটিবেগুনের পুস্তিকায় ডগা ও ফলের পোকা না লাগলেও পাতায় বা কান্ডে, গোড়ায় লাগতে পারে বলে কিছু কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রাকৃতিক কীটনাশক যেমন নিমের বীজ, নিমের তেল যেমন আছে তেমনই আছে সাবানের গুড়া, ট্রিক্স, রাসায়নিক কীটনাশক মালাথিয়ন, ওমাইট, ব্যভিস্তন দেয়ার কথা। অর্থাৎ বিটিবেগুনের প্রবক্তারাও দাবী করবেন না যে বিটিবেগুন সম্পূর্ণ কীটনাশক মুক্ত। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের অনুসন্ধানে এর চেয়েও ভয়ানক তথ্য এসেছে।
বিটিবেগুন চারা লাগাবার পর থেকে বেগুন ধরা পর্যন্ত নানা রকম ভাইরাস, ফাঙ্গাস, কীট ও মাকড়সার আক্রমণ হতে দেখা গেছে। বিশেষ করে পাতা, কান্ড, শেকড় নষ্ট করে দেয়া এবং ফল ধরেই পচে যাওয়ার ঘটনা অনেক ঘটেছে। তত্ত্বাবধানকারী কৃষি কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা বিটিবেগুনের ক্ষেত্রে এতো পোকামাকড় দেখতে চান না, তাই তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরণের কীটনাশক বা ওষুধ প্রয়োগ করার জন্যে নিজেরাই দিয়ে গেছেন। হিসাব করে দেখা গেছে প্রায় ৩৫ রকমের কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে যার মধ্যে অন্তত পাঁচটি নিষিদ্ধ কীটনাশক যেমন Bidrin, Darsbun, Diazinon Ges Furadan আছে। অন্যান্য কীটনাশকগুলোও ৭৬টি অনুমোদন প্রাপ্ত কীটনাশকের তালিকার মধ্যে নেই। অর্থাৎ বিটিবেগুনে কীটনাশকের যথেচ্ছো ব্যবহার হয়েছে। নিষিদ্ধ কীটনাশক পাওয়া গেছে গাইবান্ধা, কুষ্টিয়া, মানিকগঞ্জ, ময়মনসিংহ এবং শেরপুর জেলায়।
ফলনের দিক থেকে বিটিবেগুন আশানুরূপ হয়নি। বিশেষ করে কৃষকরা যখন তুলনা করে দেখেছেন যে তাদের আশেপাশে যারা স্থানীয় জাতের বেগুন চাষ করেছে, তার তুলনায় তাদের ফলন ছিল অত্যন্ত কম। আরও দুঃখের বিষয় হচ্ছে বিটিবেগুন বাজারে নিলে দাম পাওয়া যায়নি। কারণ বিটিবেগুন দেখতে মোটেও আকর্ষণীয় নয় এবং কিছুক্ষণ রাখার পর তা চিমসে যায়। তাই তারা বেশীরভাগ ক্ষেত্রে পাইকারী বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন যা অন্য বেগুনের সাথে মিশিয়ে বিক্রি করা হয়েছে। অন্য বেগুনের দাম ২০ টাকা কেজি হলে বিটি বেগুনের দাম ৫ টাকার বেশী পাওয়া যায়নি। আর্থিকভাবে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। যদিও বীজ, সার, কীটনাশক কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে বিনামূল্যে দেয়া হয়েছে, কিন্তু মাঠ তৈরি করা, সেচ দেয়া ইত্যাদিতে খরচ তাদের নিজেদেরই করতে হয়েছে। এক একজন কৃষক মোট খরচের হিসাব দিতে পারেন নি, কারণ কৃষি কর্মকর্তাদের কাছেই হিসাব রয়েছে তবুও নিজেদের খরচের হিসাবে তাদের জনপ্রতি লোকসান হয়েছে ১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা।
প্রায় সব কৃষক বিটিবেগুন পরিবারে রান্না করে খেয়েছেন, তবে স্বাদের দিক থেকে তাদের ভাল লাগেনি। ফলে এটা এখন জানা সম্ভব যে কৃষকদের কয়জন বিটিবেগুন খেয়েছেন। কিন্তু যেসব বেগুন বাজারে কোন প্রকার লেবেল ছাড়া বিক্রি হয়েছে সেই বেগুন কারা খেয়েছে তা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তাই স্বাস্থ্য ক্ষতি আছে কি নেই এই দাবী বিটিবেগুন প্রবক্তারা করতে পারবেন না।
কৃষকরা স্বেচ্ছায় আর বিটিবেগুন চাষ করবেন না বলে জানিয়েছেন। দু’একজন বলেছেন তাঁরা অন্যদেরকেও করতে দেবেন না।
বিটিবেগুনের পর ‘গোল্ডেন রাইস’: সবজির পর ধানে কারসাজি এ কিসের আলামত?
বেগুনের ওপর জিএমও’র চাপ যেতে না যেতেই আসছে ধানের ওপর জেনেটিক ইঞ্জিনীয়ারিংয়ের চাপ। ‘গোল্ডেন রাইস’ নামক একটি ধান যাকে ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ বলে দাবী করা হচ্ছে তা মূলত ধানের ওপর দখলদারী ছাড়া আর কিছু নয়। গত সেপ্টেম্বর, (২০১৫) মাসের ২০ তারিখে ক্রপ বায়োটেকনোলজির ন্যাশনাল টেকনিকাল কমিটি বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিউটটি (BRRI) কে নিয়ন্ত্রিত মাঠ গবেষণা (confined field trials) বি আর ২৯ ধানকে গোল্ডেন রাইস হিসেবে চাষ করার অনুমতি দিয়েছে। খবরটি প্রকাশিত হয়েছে ৮ অক্টোবর, ২০১৫ ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে এক বিরাট শিরোনামে “Bangladeshi scientists ready for trial of world’s first ‘Golden Rice’। খবরটিতে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে এখানে এমনভাবে দেখানো হচ্ছে যেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানীরাই এই ধানটি আবিস্কার করেছেন বাংলাদেশের প্রয়োজনে। এবং পৃথিবীর প্রথম গোল্ডেন রাইস এখানে উৎপাদন হচ্ছে যেন বা খুব একটা গর্বের বিষয়।
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ ধান বললে স্বাস্থ্য নিয়ে যারা কাজ করেন তাঁরা স্বাগত জানাতেও পারেন। কিন্তু আমরা ধানের মাধ্যমে ভিটামিন-এ খাই না। আমাদের দেশের প্রচুর শাক সবজি রয়েছে যা ভিটামিন এ সমৃদ্ধ, বিশেষ করে হলুদ রংয়ের সবজি ও ফল যেমন মিষ্টি কুমড়া, গাজর, পাকা পেঁপে, বাংগী, কাঁঠাল, আম, কলা। অনেক ধরণের শাক যেমন কাঁটানটে, সাজনাপাতা, কলমি, পুঁইশাকসহ আবাদি ও অনাবাদী শাক রয়েছে। চালের মধ্যে ভিটামিন এ আলাদা করে ঢোকাবার দরকার নেই, ঢেকিছাঁটা চালের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’ পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। এতো সব থাকতে গোল্ডেন রাইস এর প্রবর্তন যথেষ্ট উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া ভিটামিন-এ ঘাটতির কারনে রাতকানা রোগ হয় ঠিক কিন্তু এখনো এই সমস্যা খুব বড় ধরণের পুষ্টি ঘাটতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় নি যে সাধারণ ব্রি ২৯ ধানকেই হলুদ বানিয়ে দিতে হবে! ক্লিনিকাল সমস্যা হিসেবে ভিটামিন এ ঘাটতি দেখা দিলে সেটার চিকিৎসাও আছে। ব্রি ২৯ ধানকে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ করা হলে তা সকল মানুষ খাবে, যার ঘটাতি নাই সেও খাবে। তাহলে সেটা কি সঠিক হবে, নাকি ব্রি ২৯ ধানকে এখন ওষুধ হিসেবেই রেখে দেয়া হবে। তাহলে মানুষ স্বাভাবিক খাবার হিসেবে কোনটা খাবে?
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ করার প্রক্রিয়াটা হচ্ছে জেনেটিক ইঞ্জিনীয়ারিং এর মাধ্যমে। তাহলে আর সব জিএমও ফসলের মতোই গোল্ডেন রাইসও অজানা ক্ষতির শঙ্কামুক্ত নয়, এবং এর মধ্যে বৈজ্ঞানিক গবেষণার সকল নৈতিক শর্ত মানা হয়েছে কিনা এবং আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলোর মধ্যে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যে যে ব্যবস্থা ছিল তাও মেনে চলা হয়েছে কিনা আমাদের জানা নেই। আজ পর্যন্ত কোন প্রতিবেদনে গোল্ডেন রাইস গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল তুলে ধরে পরিবেশবাদী এবং স্বাস্থ্য কর্মীদের আশ^স্ত করা হয়নি।
বোরো মৌসুমে উৎপাদিত ব্রি ধান ২৯ এর সাথে বাংলাদেশের মানুষ পরিচিত। এই ধান দেখতে সাদা এবং ব্যাপকভাবে চাষ হয়, এবং মানুষ তা খায়। এই ধানের পুষ্টিমাণ ঠিক আছে কিনা সে বিষয় নিয়ে বিতর্ক হতে পারে কিন্তু এই ধানকেই যখন গোল্ডেন রাইস বলে ছবিতে হলুদ রংয়ে থাকে তখন একটু থমকে যেতে হয়। এটা আর আমাদের সেই অতি চেনা ব্রি ধান ২৯ নেই। সিনজেন্তা কোম্পানির তৈরি জিএমও ধান গোল্ডেন রাইস। গোল্ডেন এর বাংলা হবে সোনালী। কিন্তু এখনো বাংলায় সোনালী ধান বলতে শোনা যায়নি। সম্ভবত বাংলাতেও গোল্ডেন রাইস হয়ে থাকবে। কিন্তু আসলে তো ভিটামিন এ’র উৎস হতে হলেও এর রং হলুদ হওয়ার কথা। এই গোল্ডেন রাইসের মধ্যে ব্রি ধান ২৯, ফিলিপাইনে অবস্থিত আই আর-৬৪ (IR-64) এবং ফিলিপাইনের একটি জাত RC-28 এর সাথে ভুট্টার জিন ঢুকিয়ে বিটা কেরোটিন (beta carotene যা ভিটামিন এ সৃষ্টি করবে) দেয়া হয়েছে। ভুট্টা হলুদ রংয়ের কিন্তু ভিটামিন এ প্রাকৃতিকভাবে শুধু হলুদ রংয়ের শাক-সবজি থেকে নয় গাঢ় সবুজ থেকেও পাওয়া যায়। কাজেই গোল্ডেন নাম দিয়ে কোম্পানি সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।
ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে যে এই বোরো মৌসুমেই GR-2 E BRRI dhan29 মাঠ পর্যায়ে চাষের জন্যে দেয়া হবে। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে? কোন প্রতিবেদনে আছে যে এই গোল্ডেন রাইস মাঠ পর্যায়ে গবেষণার জন্যে উপযুক্ত প্রমাণিত হয়েছে? বিটিবেগুনের ক্ষেত্রে কোন প্রতিবেদন ছাড়াই চাষ করা গেছে বলেই গোল্ডেন রাইসও করা যাবে? এই ধান বাংলাদেশের কোটি কোটি কৃষকরা আবাদ করেন। যদি এই ধানে স্বত্ত্ব বিদেশী কোম্পানির হাতে চলে যায় তাহলে এতো কৃষকের ভাগ্যে কি ঘটবে?
প্রতিবেদনে একটি তথ্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। বলা হচ্ছে, ‘একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ১৫০ গ্রাম গোল্ডেন রাইস খেলে তার জন্যে প্রয়োজনীয় ডোজের ভিটামিন এ পাবে। বাংলাদেশের মানুষ তাদের ক্যালোরি গ্রহণের ৭০% ভাগই পান ভাত থেকে’। তাহলে কি যার শরীরে ভিটামিন এ ঘাটতি নেই সেও একই পরিমাণে গোল্ডেন রাইস খাবে? যারা পুষ্টির অভাবে দৃষ্টি শক্তির ক্ষতি হয় বলে কাজ করেন তাদের প্রধান পরামর্শ হচ্ছে খাদ্যকে বৈচিত্র্যপূর্ণ করা। শুধু ভাত খেয়ে কখনোই পুষ্টি ঘাটতি দূর হবে না।
মনে রাখতে হবে আমরা ভেতো বাঙ্গালী বটে কিন্তু শুধু ভাত খেয়ে থাকি না। ভাতের সাথে শাক-সবজি, ছোট মাছ, একদম কিছু না থাকলে একটু মরিচের ভর্তা দিয়ে হলেও খাই। কোম্পানি শুধু দেখে আমাদের পেট আছে, কিন্তু এই পেটে খাদ্য যেতে হলে জিহ্বা ছুঁইয়ে যেতে হবে। আর বাংলাদেশ ছোট দেশ হলে কি হবে? এলাকা ভেদে খাওয়ার ধরণ ও পছন্দ আলাদা। তাহলে ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে যদি স্বাদ না লাগে তাহলে কোনদিন এই খাদ্য গ্রহণযোগ্য হবে না। ওষুধ হিসেবে নিম তিতাও খাওয়া যায়, কিন্তু নিয়মিত খাদ্য স্বাদ ছাড়া গ্রহণ করা যাবে না। কাজেই ভিটামিন এ ঘাটতি যা আছে তা সমাধানের পথ হচ্ছে শাক-সবজির বৈচিত্র্য বাড়িয়ে দেয়া। বাংলাদেশে এককাট্টা কিছু চালিয়ে দেয়া অত সহজ নয়।
গোল্ডেন রাইসের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে নতুন একটি তথ্য বলা হচ্ছে যে এই চাল গর্ভবতী মাদের বেশী দরকার হবে। অথচ ভারতের বিজ্ঞানী ড. তুষার চক্রবর্তী সম্প্রতি একটি সভায় সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, ‘এই ধানের মধ্যে রেটিনিক এসিডের ডিরাইভেটিভ আছে যা গর্ভবতী নারী খেলে তার সন্তানের জন্মগত ত্রুটি (birth defects) ঘটতে পারে, যাকে মেডিকেল ভাষায় teratogenicity বলা হয়।
বাংলাদেশ ধানের আদি নিবাস। ১৯১৫ সালে এদেশে ১৫,০০০ জাতের ধান ছিল। এখনো কম পক্ষে ৭,৫০০ জাতের জাত ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানেই আছে, নয়াকৃষি কৃষকদের হাতে আছে ৩,০০০ জাতের ধান। আমাদের কি আর অন্য ধানের দরকার আছে? এখানে কৃষক বলতেই ধান উৎপাদন করেন। কাজেই ধানের দেশে ধানের ওপর জিন কারিগরি বা বিকৃতি ঘটানো কোন দায়িত্বশীল কাজ হতে পারে না। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে জিএম ধানের তথা জিএম ফসলের নেতিবাচক প্রভাবের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠেছে, অথচ দুঃখের বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশে অনায়াষে ছাড় দেয়া হচ্ছে বিটিবেগুনের মতো গোল্ডেন রাইসও। অন্য দেশে ছাড় পায় নি, তাই এখানে আসছে। এই ধান প্রবর্তনের চেষ্টার প্রথম থেকে ফিলিপাইনসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পরিবেশবাদীরা প্রতিবাদ করেছেন। বাংলাদেশেও ২০০৫ সাল থেকে প্রতিবাদ হয়েছে। তখন ভিন্ন সরকার ছিল, কিন্তু এই ক্ষেত্রে কেন তারা একমত?
গোল্ডেন রাইস নাম দিয়ে জিএমও ধানের প্রবর্তন অনেক আশংকার সৃষ্টি করেছে। এসব প্রশ্নের নিরসন না করে সরকার যেন মাঠ পর্যায়ে না যান তার আহ্বান জানাই।
বিটিবেগুন দিয়ে শুরু, এখন গোল্ডেন রাইস, তারপর অন্যান্য জিএমও ফসল প্রবর্তনের দিকে এগুচ্ছে বাংলাদেশ। জুলাই মাসে কৃষি মন্ত্রণালয় ঘোষণা দিয়েছে এক বছরের মধ্যে জিএমও আলু মাঠ পর্যায়ে চাষের জন্য প্রবর্তন করবে [নিউ এইজ, ২৯ জুলাই, ২০১৫] এবং জিএমও তুলা গ্রীণ হাউজ ট্রায়াল শুরু করেছে [The Daily Star, July 14, 2015]।
একের পর এক জিএমও ফসলের প্রবর্তন, এদেশের মানুষ ও পরিবেশের জন্য যে হুমকির সৃষ্টি করবে তার দায় দায়িত্ব কে নেবে?
এটা সুস্পষ্ট যে ২০১৩ সালে দেয়া কৃষি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে মাঠ পর্যায়ের চাষ হলেও জিএম ফসলের অনুমোদন দেয়া হয় পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে আন্তর্জাতিক বায়োসেফটির নিয়মের আওতায়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কোন প্রকার তত্ত্বাবধান নেই এবং অনুমোদনের যে শর্ত ছিল তা পালিত হচ্ছে না। বিশেষ করে বিটিবেগুন বাজারজাত করার ক্ষেত্রে লেভেল দেয়ার যে শর্ত ছিল তা মানা হয়নি। এ ব্যাপারে পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে কোন উদ্যোগ নিতেও দেখা যাচ্ছে না।
দাবী:
১. বিটিবেগুনের দুই বারের মাঠ চাষের অভিজ্ঞতা প্রেক্ষিতে অনুমোদনের শর্ত এবং বায়োসেফটি রুল মেনে চলা হয়েছে কিনা তার একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হোক।
২. কৃষকের ক্ষতি বিবেচনা করে তৃতীয় বারে চাষের জন্যে যেন দেয়া না হয়।
৩. একের পর এক জিএমও ফসল অনুমোদন দেয়ার আগে জনমত নেয়ার জন্যে উদ্যোগ নেয়া হোক।
৪. গোল্ডেন রাইস বা ভিটামিন এ ধান মাঠ পর্যায়ে চাষের আগে এর প্রয়োজনীয়তা যাচাই করা হোক এবং কোন মতেই যেন গর্ভবতী মায়েদের দেয়া না হয় তার ব্যবস্থা নেয়া হোক।